আজ শুক্রবার, ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শেখ হাসিনা ও তার পরিবার বর্গের নামে ভুয়া ফেসবুক ব্যবহার কারী আটক

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র‌্যাবের অভিযানে ভুয়া ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে অর্থ আদায় এবং ফেসবুকে গুজব সৃষ্টি রাষ্ট্র বিরোধী প্রচারণা চালানোর অভিযোগে ৫ জন সাইবার অপরাধী গ্রেফতার করা হয়েছে।


তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট তৈরীর মাধ্যমে প্রতারণা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দের নামে-বেনামে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট তৈরি ও ব্যবহার, বিভিন্ন জাতীয় নেতাদের ছবি বিকৃত বা ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে ফেসবুকে পোস্ট ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় নেতাদের খাটো করার অপচেষ্টা। ফেসবুকে ভুয়া ও গুজবের আগ্রাসনের মাধ্যমে দেশের শান্তি প্রিয় জনগণকে উস্কানি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘœ করার মত ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ এ অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ও পরে নির্বাচন কমিশন সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে গুজব রটানো, নির্বাচনের পূর্বে নিরাপদ সড়ক চাই, সরকারী চাকুরীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সাম্প্রতিক গার্মেন্টস্ শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলনের নামে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ ছড়ানোর ঘটনাগুলো হরহামেশাই ঘটিয়ে আসছে সাইবার অপরাধীরা।

গত ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, এমপি স্বাক্ষরিত একটি প্রেস রিলিজ র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের গোচরিভুত হয়। উক্ত প্রেস রিলিজ থেকে জানা যায়, কিছু কুচক্রি মহল বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর নামে কিছু ফেইক ফেসবুক একাউন্ট/পেজ থেকে নানা রকম বিভ্রান্তিমূলক, মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য-সংবাদ প্রচার হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যাদ্বয় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর নামে অফিসিয়ালি কোন ফেসবুক পেইজ নেই। র‌্যাব এর সাইবার টহল দল বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধানকালে জানতে পারে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ফেইক ফেসবুক একাউন্ট/পেজ খুলে তাতে নিজেদের মোবাইল নাম্বার সংযুক্ত করে নিজেদের বিশেষ এজেন্ট দাবী করে প্রতারণা করে আসছে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ভুয়া বা ফেক ফেসবুক তৈরী করে সরকার বিরোধী প্রচার প্রচারণা, বিভিন্ন জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত বিষেদাগার এর মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া, দেশী ও বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের অনলাইন সংস্করণকে বেছে নিয়েছে যা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-২ এর সাইবার টহল দল ফেইক ফেসবুক ব্যবহারকারী ও তাদের মূল হোতাদের আইনামলে আনার লক্ষ্যে গত ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখ ভোর থেকে ১৭ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখ সকাল ০৮.০০ ঘটিকা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর মগবাজার, ডেমরা, মেহাম্মদপুর ও ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ ও সাভার এলাকা থেকে ০৫ জন সাইবার অপরাধী (১) মোঃ ওমর ফারুক (৩০), (২) মোঃ সাব্বির হোসেন (২৪), (৩) মোঃ আল আমিন (২৭), (৪) মোঃ আমিনুল ইসলাম আমিন (২৫) এবং (৫) মোঃ মনির হোসেন (২৯) (২৫)দেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে তাদের ব্যক্তিগত ভিন্ন ভিন্ন মডেলের ১২ টি মেবাইল ফোন ও ১ টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

পেশায় ব্যবসায়ী মোঃ ওমর ফারুক (৩০), পিতা-মোঃ মোখলেস শেখ, সাং-আকসারচর, থানা-মোহা¤মদপুর, জেলা-মাগুরা, বর্তমানে সাং-তালবাগ, বøক-বি, বাড়ী নং-৩১/১, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা গত ৪ বছর ধরে ফেসবুক ব্যবহার করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ৬ টি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর নামে ১ টি, আওয়ামী সমর্থক গোষ্ঠী সহ বিভিন্ন জাতীয় নেতাদের নামে সর্বমোট ৩৬ টি পেজ ব্যবহার করেন। নিজ নামে তার ৬ টি ফেসবুক আইডি আছে। তিনি তার পরিচালিত সকল ফেসবুক পেজ এ তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছেন। ফেসবুক পেইজের সুত্র ধরে নিজেকে দলের বিশেষ এজেন্ট দাবী করে তিনি আসন্ন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচনে মনোনয়ন প্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন নারী নেত্রীদের ফোন করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার আহŸান জানাচ্ছেন।

মোঃ সাব্বির হোসেন (২৪), পিতা-মৃত আবদুর রহিম, সাং-ইন্নাকাঠি থানা-কোতোয়ালী, জেলা-বরিশাল, বর্তমানে-ধলপুর ১৪ নং আউটফল, ডিএসসিসি ষ্টাফ কোয়ার্টার, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা’র অধিবাসী। পেশায় সাইবার কমিউনিকেশন এক্সপার্ট সাব্বির সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের কৃত ২ টি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে রুজুকৃত ৪ টি সহ সহ মোট ৬ টি মামলার এজাহার নামীয় আসামী। তিনি পূর্বে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশ নেত্রী সাইবার ফোরাম পেইজ এর এডমিন ছিলেন। সম্প্রতি তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশ নেত্রী সাইবার ফোরাম এর স্থলে শেখ হাসিনার পরামর্শ ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাম সংযোজন করে তাতে নিরাপদ সড়ক চাই ও কোটা সংস্কার আন্দোলন এর উস্কানিমূলক ভিডিও পোষ্ট করে আসছেন। সাব্বির যে কোন প্রকার নতুন ই্যসুর আগমণ হলেই তা সরকার বিরোধী অপপ্রচারে রুপান্তর করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে থাকেন।

মোঃ আল আমিন (২৭), পিতা-মোঃ মিজানুর রহমান, সাং-ডেমরা কলাপাড়া, থানা-ডেমরা, ডিএমপি, ঢাকা পেশায় বেসরকারী চাকুরে। তিনি সাইবার অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত একটি পেইজ এর এডমিন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি বিকৃত আকারে প্রকাশ করেন, বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠান যেমনঃ বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশকে ঘিরে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশ করে তাতে ভুয়া ছবি সুপার এ্যানিমেশন মাধ্যমে ফেসবুকে পোষ্ট করে থাকেন।

মোঃ আমিনুল ইসলাম আমিন (২৫), পিতা-আব্দুল লতিফ, সাং-মহিষাপোতা, থানা-বানারীপাড়া, জেলা-বরিশাল, বর্তমানে সাং-৪২৪/নয়াটোলা, চেয়ারম্যান গলি, বড় মগবাজার, ঢাকা- ১২১৭ পেশায় ছাত্র। তিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের ছাত্র সংগঠনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য। তিনি ইউ টিউবে বিভিন্ন কমিক আইটেম প্রচার করে থাকেন। তার ফেসবুক একাউন্ট মোট ৪ টি ও ফেইসবুক পেইজ ৩ টি। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর লোগো সংযোজন করে ১টি সহ প্রজন্ম চেতনা ও স্পাই উদ্দিন নামে ফেসবুক পেজ এ গুজব ও আন্দোলন সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন উস্কানিমূলক ও কুরুচিপূর্ণ ভিডিও পোষ্ট করে ভাইরাল আকারে প্রচার করে জনমনে অসন্তোষজনক সৃষ্টি পাঁয়তারা চালিয়ে আসছেন।

পেশায় ফটকা ব্যবসায়ী মোঃ মনির হোসেন (২৯), পিতা-মৃত আঃ কাদির, সাং-ভাওয়াল মনহরিয়া, থানা-কেরানীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা গত ৭/৮ বছর ধরে ফেসবুক ব্যবহার করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে কেরাণীগঞ্জ থানায় বেশ ক’টি মামলা রয়েছে। তার নামে ৩ টি ফেসবুক আইডি ও ৪ টি পেইজ রয়েছে। তিনি সত্যের বিস্ফোরণ নামে একটি পেইজ এর এডমিন। মনির হোসেন তার ফেসবুক আইডি ও পেইজ হতে রাজনৈতিক অপপ্রচার, রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপ ও বিভ্যান্তি মূলক তথ্য প্রচার করে দেশে অস্থিরতা বিরাজের পাঁয়তারা করছেন।

স্বার্থান্বেষী এসব কুচক্রিমহল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়, দেশে বিদেশে সরকারের ক্ষুন্ন, স্থিতিশীলতা বিনষ্ট ও অস্থিতিশীলতা তৈরীর উদ্দেশ্যে ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়াকে ম্য্যধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। আসামীদের উক্তরুপ কার্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮ এর ২২/২৩/২৪/২৫ ও ৩১ ধারার অপরাধ।

উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ